কালমেঘ পাতার উপকারিতা: Benefits of Kalmegh leaves in Bengali এই কালমেঘ পাতার নাম প্রাচীনকাল থেকেই আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে শোনা যায়। তবে এর ঔষধি গুনের জন্য এই পাতাকে সর্বরোগ নিবারণী বলা হয়। তবে এই পাতার স্বাদ একটু দিতে হয় বলে এটি আরেকটি নামে পরিচিত তাহলো কিং অফ বিটার্নেস।
এই কালমেঘ পাতা সাধারণত আয়ুর্বেদ, হোমিওপ্যাথি বা চিকিৎসার ক্ষেত্রে ভীষণ ভাবে ব্যবহৃত হয়।
কালমেঘ পাতা খাওয়া প্রয়োজন কেন?
- যদি ডায়াবেটিস হওয়া কোন ব্যক্তি থাকে তবে তাকে অবশ্যই কালমেঘ পাতা খাওয়াতে হবে।
- এই কালমেঘ পাতা ডায়াবেটিসের অব্যর্থ ঔষধ হিসেবে কাজ করে।
- মানব শরীরে ব্লাড সুগারের পরিমাণ কে ভীষণভাবে কম রাখতে সাহায্য করে। তবে অবশ্যই সেটি ডাক্তারের পরামর্শমতো খেতে হবে। কিন্তু এটা খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- ক্যান্সারের মত রোগকেও এটি দূরে সরিয়ে রাখবে।
- এই পাতার ঔষধি গুন শরীরে ক্যান্সারের কোষগুলিকে সক্রিয় হতে দেয় না বা ক্যান্সারের কোষগুলিকে বাড়তে দেয় না।
- এটা ক্যান্সার রোগীদের ওষুধ হিসেবেও ব্যবহার করা হয়।
সুতরাং, নিয়মিত কালমেঘ পাতা খেতে হবে। তবে কোনদিনই শরীরে ক্যান্সারের মতো মারণ রোগ বাসা বাঁধতে পারবে না।
লিভার সমস্যায় কালমেঘ পাতার ভূমিকা
- লিভার জনিত যেকোনো রকম সমস্যার অব্যর্থ ওষুধ হলো এই কালমেঘ পাতা। এটি লিভার টনিক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
- অতিরিক্ত মদ্যপান বা করা ওষুধ দীর্ঘদিন ধরে কোন ব্যক্তি খেলে তার লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয় অর্থাৎ কালমেঘ পাতা এই ক্ষতির নিরাময় হয়ে কাজ করে।
- এছাড়া,আজকাল খাদ্যাভাস বা ফল ও সবজিতে ব্যবহৃত পেস্টিসাইট মানব শরীরের লিভারকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
এক্ষেত্রে, কালমেঘ পাতা নিয়মিত খেতে হবে। তবেই এই সমস্যার হাত থেকে খুব অনায়াসে রক্ষা পাওয়া যায়।
এছাড়াও আর্থারাইটিসও কমিয়ে দেয় এই কালমেঘ পাতা। কালমেঘ পাতা আর্থ্রাইটিস রোগের ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অনেক সময় গাঁটে ব্যথা হয়। যার থেকে আর্থারাইটিস হয়। এই ধরনের সমস্যার ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয় এই কালমেঘ পাতা। ১৫-২০ টি কালমেঘ পাতার রস করে প্রতিদিন খেতে হবে। ফলে আর্থারাইটিস বা গাটের ব্যথার কোন সমস্যাই থাকবে না। এছাড়াও জ্বর, সর্দি-কাশি এই ধরনের সমস্যাতেও ভীষণ উপকারী এই পাতাটি।
কালমেঘ পাতা খেলে কি উপকার হয়?
কালমেঘ পাতা জ্বর, সর্দি,গলা ব্যথা, গলা বসে যাওয়ায়, টনসিলাইটিস ইত্যাদি ক্ষেত্রেও ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
কিভাবে খেতে হবে সেই সম্পর্কে কিছু আলোচনা করা হলো-
- কালমেঘ পাতা ভালো করে ধুয়ে হালকা গরম জলে মিশিয়ে ছাঁকনিতে ছেঁকে নিতে হবে।
- এই কালমেঘ পাতার রস যেকোনো রকম ঠান্ডা লাগা জনিত রোগ খুব তাড়াতাড়ি সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে।
- তবে এর স্বাদ তিতো হলে রস খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মধু খেয়ে নিতে হবে। তাহলে, মুখের তিতো ভাব কেটে যাবে।
- এছাড়া ক্রনিক লিভার বা ভাইরাল ফিভার যদি হয়, তাহলে শরীর অনেক সময় দুর্বল হয়ে যায়।
- সেই সঙ্গে লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়।কালমেঘ পাতার রস এই ধরনের জ্বর থেকে যে দুর্বলতা সৃষ্টি হয় সেটাকে কাটিয়ে তুলতে ভীষণ ভাবে সাহায্য করে।
এছাড়া জ্বরের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত লিভার কেউ ঠিক রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া এই পাতা ডেঙ্গু এবং ম্যালেরিয়া রোগের প্রতিরোধক হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। শুধু তাই নয়, ছোট বাচ্চাদের ডায়রিয়া বা গ্যাস কম হয়ে যাওয়া ইত্যাদি নানা রকম রোগের ক্ষেত্রে এই কালমেঘ পাতার রস ঔষধ হিসেবে ভীষণ ভাবে কাজ করে।
- কৃমি হলেও শিশুদের কালমেঘ পাতার রস খাওয়াতে হবে। সেটা কৃমি গুলোকে মেরে ফেলতে সাহায্য করে এবং সেইসঙ্গে পেট পরিষ্কার করতেও সাহায্য করে।
- কালমেঘ পাতা রক্তকে পরিশুদ্ধ করার ক্ষমতা রাখে।
- এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে সেই কারণে আমাদের ত্বকের নানা রকম সমস্যার ক্ষেত্রে কালমেঘ পাতা অত্যন্ত কার্যকরী
- কালমেঘ পাতা আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতেও সাহায্য করে।
আলসার
- আলসার প্রতিরোধক হিসেবেও কালমেঘ পাতার রস খাওয়া খুবই জরুরী।
- কালমেঘ পাতা হজম ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয়।
- শুধু তাই না, নিয়মিত যদি কালমেঘ পাতা খাওয়া যায়।
- তাহলে, মানব শরীরের শারীরিক শক্তি এবং কর্মক্ষমতা অনেকটাই বেড়ে যাবে।
- যেসব মহিলাদের অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা থাকে বা এর থেকে হওয়া নানারকম অবাঞ্ছিত সমস্যা রয়েছে। সেক্ষেত্রে, কালমেঘ পাতার রস ভীষণ উপকারী।
এমনকি, সর্পদংশন, বিছে বা এই ধরনের বিষাক্ত কোন প্রাণীর কারণে উপশম হিসেবে কালমেঘ পাতার সঙ্গে যদি পুরো গাছটিকে ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তাহলে, ভীষণ উপকার পাওয়া যায়।
আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের কুষ্ঠরোগ এবং কলেরার চিকিৎসা করতে কালমেঘ পাতা ব্যাবহার করা হয়। তবে,গর্ভবতী মহিলাদের কালমেঘ পাতার রস না খাওয়াই ভালো। সুতরাং, এই কালমেঘ পাতা খুবই উপকারী এবং কার্যকরী।